মেহেদী ডিজাইন ছবি এবং মেহেদী দেওয়ার আগে এবং যা কখনোই করা যাবে না

আজ আমরা সিম্পল কিছু মেহেদী ডিজাইন নিয়ে এবং সেই সাথে কিছু ছবি থাকবে যাতে খুব সহজে বুঝতে পারেন।   



মেহেদি বা হেনা বাঙালি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, মেহেদি ছাড়া যেন কোনো অনুষ্ঠানের পূর্ণতাই পায় না। বিশেষ করে ঈদ এবং বিবাহের আয়োজনে, মেহেদি বাঙালি মেয়েদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। রাসূল (সাঃ) তাঁর সাহাবীগণকে চুল ও দাড়িতে মেহেদি ব্যবহার করার ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে জন্য চুল ও দাড়িতে মেহেদি ব্যবহার করা সুন্নাত। এটি ব্যবহারে পুরুষের চুল ও দাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।

এটি এক ধরনের সপুষ্পক উদ্ভিদ, যার পাতা প্রাচীনকাল থেকে ত্বক, চুল ও নখ রঙিন করার কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এছাড়াও মেহেদিতে নানান প্রকার ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে। মেহেদির বৈজ্ঞানিক নাম "Lawsonia inermis"।এর গাছ সাধারণত ১.৮ থেকে ৭.৬ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। পাতা সবুজ রঙের ছোট আকৃতির হয়। এর ফুল এবং ফলও হয়।  আজ আমরা আলোচনা করবো ত্বকে এবং চুলে মেহেদি দেওয়ার বিষয়টি।



চুলে মেহেদি ব্যবহারের উপকারিতা: 


চুলে মেহেদি দেওয়ার ফলে মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখে ও খুশকি দূর করে। এছাড়াও চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। 

চুল পড়া কমায় এছাড়া চুলের রুক্ষতা দূর করতেও মেহেদি ব্যবহার করতে পারেন।

ঘন চুল কে না চায়। কিন্তু অনেকের চুল পরে পাতলা হয়ে যায়। যাদের পাতলা চুল তারা মেহেদি ব্যবহার করতে পারেন এতে অনেক উপকারে আসে।

বয়স বাড়লে অনেকের চুলে পাকা শুরু করে এবং সাদা হয়ে যায়। সাদা চুল ঢাকতে মেহেদি ব্যবহার করতে পারেন। এতে রঙিন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চুল ভালো থাকে।




চুলে মেহেদি ব্যবহারের নিয়ম: 


  • মেহেদি গুঁড়োর সঙ্গে পরিমাণ মত পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট চুলের গোড়া থেকে শুরু করে সমস্ত চুলে ভালো করে লাগিয়ে ৩০ থেকে ৫০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।



  • চুল রঙ করতে পরিমাণ মত কফি পাউডার পানিতে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিন।  একটা পাত্রে পরিমাণ মত মেহেদির গুঁড়ো নিয়ে গরম কফি সঙ্গে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। 


  • চুলের খুশকি দূর করতে মেহেদির গুঁড়োর সঙ্গে লেবুর রস এবং দই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এর পর চুলে মেখে ৩০ মিনিট এর মত অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। 


ত্বকে মেহেদি ব্যবহারের উপকারিতা 


  • মেহেদির পেস্ট পিঠ, ঘাড় সহ ঘামাচি আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করুন। এটি ঘামাচির চুলকানি এবং জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে।



  • মেহেদি গুঁড়োর পেস্ট ক্ষত স্থানে লাগিয়ে রাখুন। ক্ষত স্থান ভালো করতে খুবই কার্যকরী এটি। 


  • সাধারণত নোংরা, জীবাণুযুক্ত পানি লেগে পানি পচা রোগ সৃষ্টি হয়। এতে দুই আঙ্গুলের মাঝের অংশে ক্ষত সৃষ্টি হয়। এই ক্ষত স্থানে মেহেদির প্রলেপ লাগিয়ে রাখলে ঘা ভালো হয়ে যায়।




মেহেদি গুঁড়ো পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট করে নিন তবে খুব বেশি পাতলা বা ঘন যেন না হয়। আপনার পছন্দের নকশা অনুযায়ী লাগিয়ে নিন। বাজারের কেমিক্যাল যুক্ত মেহেদি যা ত্বকের জন্য ক্ষতি কর হতে পারে তাই অর্গানিক মেহেদি ব্যবহারের চেষ্টা করুন। মেহেদি ত্বকে যত বেশি সময় লাগিয়ে রাখতে পারবেন রঙ তত বেশি উজ্জ্বল হবে। 



মেহেদি ব্যবহারের পর কিছু বিষয় খেয়াল রাখা উচিৎ। ভালো রং পেতে মেহেদি তোলার পর কমপক্ষে ৩-৪ ঘণ্টা পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। এতে রঙ আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠে। অনেকে মেহেদি ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে  ফেলেন। এটা করা উচিৎ নয়, কারণ সাবানের ক্ষারীয় উপাদান মেহেদির রঙ নষ্ট করে ফেলে। চাইলে ত্বকে চিনি বা লেবুর পানি স্প্রে করতে পারেন এতে রঙ আরো গাঢ় হয়। চেষ্টা করুন কোনো প্রকার হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক ভাবেই শুকানো। 





মেহেদি ব্যবহারে কিছু সতর্কতা 


  • ত্বকে কোনো অ্যালার্জি বা চর্মরোগ থাকলে মেহেদি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।


  • আপনার যদি ঠান্ডাজনিত সমস্যা থাকে তবে মেহেদি এড়িয়ে চলুন কারণ মেহেদির শীতল প্রভাব ঠান্ডার সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।


  • কপালে কিংবা মাথার তালুতে মেহেদির দাগ এড়াতে চুলের লাইনে পেট্রোলিয়াম জেলির কোট লাগিয়ে নিন।


  • মেহেদি পেস্টকে চুলে সম্পূর্ণ শুকাতে দিবেন না। এতে চুলে পানি শূন্যতা সৃষ্টি হতে পারে।




Post a Comment

Previous Post Next Post